বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

বজলু সাহেবের অনুশোচনা!!

লেখাপড়া জানা সত্ত্বেও বজলু সাহেব জীবনে চাকুরী-বাকুরী করেননি। রোজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে অফিসে যাওয়া, সারাদিন গাধার খাটুনী খেটে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরার মত একঘেঁয়েমী জীবন-যাপন নাকি বজলু সাহেবের চরিত্রের সাথেই যায় না। মাঝে মাঝে ভাবতেন ব্যবসা বানিজ্য করবেন। কিন্তু অতি মাত্রায় ধার্মিক বজলু সাহেব আবার পরকাল নিয়েও ব্যাপক চিন্তিত। এই জীবনে এত পয়সা-কড়ি, গাড়ী-বাড়ি দিয়েই বা হবে কি? এগুলা কি তিনি কবরে নিয়ে যাবেন? তাছাড়া মৃত্যুর পর আল্লাহর কাছে ধন-সম্পদের হিসাবও তো দিতে হবে! এসব চিন্তা-ভাবনা করার পর অবশেষে তিনি ব্যবসার কথাও মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেছেন। আপনারা হয়ত ভাবছেন, “তাহলে বজলু সাহেব করেন টা কি? উনার সংসারই বা চলে কিভাবে”?

বজলু সাহেবের বাবা অতি কষ্টে ঢাকা শহরে একটি ৫ কাঁঠা জমি কিনেছিলেন। মৃত্যুর বছর পাঁচেক আগে তিনি সেই জমিতে একটি একতলা দালানও তুলেছিলেন। বজলু সাহেব বুদ্ধি করে সেখানে আরো কয়েকটা ছোট ছোট রুম করে ফেলেছেন। সেগুলার ভাড়া দিয়েই আপাতত তার সংসার চলছে। বউ আর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে সুখেই আছেন তিনি। বজলু সাহেবের অন্যান্য ভাইয়েরা সমাজে বেশ ভালো ভাবেই প্রতিষ্ঠিত। বাবার এই ছোট সম্পত্তির প্রতি তাদের কোনো দাবী-দাওয়া নেই। তারা স্বেচ্ছায় বজলু সাহেবকে এখানে চড়ে-বড়ে খাওয়ার সুযোগ দিয়ে রেখেছে।


পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়স্ক বজলু সাহেব প্রতিটি দিন কিভাবে পার করেন তার একটা নমুনা দেই। প্রতিদিন ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠেই ফযরের নামাজ আদায় করেন তিনি। তারপর কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করে বাসায় ফিরে আসেন। বজলু সাহেবের অনেকগুলা বদ অভ্যাসের মধ্যে একটা হল ফযর নামাজ আদায় করার পরপরই স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম করা। ও এই ফাঁকে বজলু সাহেবের স্ত্রীর কথাও একটু বলে রাখি। তার স্ত্রীর বয়স ৪০-এর কাছাকাছি। তবে এই বয়সেও তিনি তার যৌবন মাশাল্লাহ ভালোভাবেই ধরে রেখেছেন। দেখতেও বেশ সুন্দরী। একটি হাইস্কুলে শিক্ষকতা পেশার সাথেও জড়িত আছেন। প্রতিদিন সাতসকালে বজলু সাহেব কিভাবে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে তার বউকে যৌনকর্মের জন্য আহবান করেন--একটু দেখা যাক...


--মাস্টরনী ও মাস্টরনী...এত বেলা হইল আর কত ঘুমাইবা?


--তোমার জ্বালায় সারাটা রাত ঘুমাইতে পারিনা। সকাল সকাল চোখটা একটু লাইগা আসে তখনও তোমার জ্বালাতন। হে মোর খোদা, কই যাই আমি!!


--ওরে আমার সোনা-ময়না পাখী, এমন কইরা কও কেন তুমি? তোমার পতি তোমারে একটু আদর সোহাগ করবার চায় সেইটা থিকাও কি তারে বঞ্চিত করবা?


--ওরে আমার বুইড়ারে...বুইড়ার কি বয়সের লগে লগে দিন দিন জৌলুসও বাড়তাছে নাকি?


বজলু সাহের তার স্ত্রীর এসব কথা শুনে শুধু দাঁত কেলিয়ে হাসেন। তারপর আস্তে আস্তে চুম্বন করার জন্য এগিয়ে যান। অতি মাত্রায় যৌনকাঁতর বজলু সাহেব অনেক সময় রুমের দরজা পর্যন্ত লাগাতে ভুলে যান। আকাশ-বাতাস কাপিয়ে যখন যৌন সঙ্গম শুরু করে দেন, দুনিয়ার কোনো হুশ আর তার থাকেনা।


বজলু সাহেবের ছেলে দশম শ্রেনীতে পড়ে। বেকার বজলু সাহেব প্রতিদিন তার ছেলেকে সাথে করে স্কুলে নিয়ে যান। বাসা থেকে স্কুলের দূরত্ব দু’মাইলের কাছাকাছি। এতটা পথ তিনি তার ছেলেকে হাটিয়ে হাটিয়ে নিয়ে যান। স্কুল ছুটি হলে আবার হাটিয়ে হাটিয়ে বাসায় ফেরত আনেন। ছেলে বাবার প্রতি চরম বিরক্ত। তার অন্যান্য বন্ধুরা ক্লাস থ্রী-ফোর থেকে একা একা যাওয়া-আসা করে। স্কুলে তাকে এ নিয়ে অনেক টিকা-টিপ্পনীও শুনতে হয়।।


--আব্বা, প্রত্যকদিন এতটা পথ হাইটা হাইটা যাইতে ভালো লাগেনা। আজকে একটা রিকশা নেও না!


--চুপ থাক! রিকশা মারাইতে আইছে! তোর বয়সে আমি প্রতিদিন ৭ মাইল হাইটা স্কুলে যাইতাম। তাছাড়া আমি প্রতিদিন তোর লগে হাইটা হাইটা যাইনা?? কই আমার তো কুনু সময় খারাপ লাগেনা! যত হাটবি ততই শরীর সুস্থ থাকব। তোর বাপেরে দেখছ না এই বয়সেও কোন ডায়বেটিস, প্রেসার, হার্টের রোগ কিছুই না। বলতে পারছ কেন নাই? শুধুমাত্র এখনো হাটাহাটি করি দেইখা! বুঝছস??


--আব্বা আমার বন্ধু-বান্ধবরা আমারে নিয়া খুব হাসাহাসি করে। আমি তো এখন অনেক বড় হইছি। আমারে এখন একলা একলা ছাইড়া দিলে কি হয়?


--এহহহ শখ কত? তোমারে একলা একলা ছাইড়া দিমু আর তুমি চিপাচাপায় গিয়া বিড়ি ফুকবা আর মাইয়াগো লগে টাঙ্কিবাজী করবা, তাই না?? আর একদিন এসব কথা মুখে আনলে এমন চটকানা লাগামুনা!! বেদ্দপ কোনানকার!!


আপনারা হয়ত ভাবছেন বেকার বজলু সাহেব শুধুমাত্র সময় কাটানোর জন্যই ছেলের পিছনে লেগে আছেন বা অনেকে হয়ত ভাবছেন, তিনি অত্যন্ত দায়িত্ববান একজন পিতা! আসল ব্যাপার কিন্তু তা না! স্কুল গেইটে প্রতিদিন অনেক মহিলা গার্ডিয়ান ঘন্টার পর ঘন্টার দাঁড়িয়ে থাকেন। ছোট বাচ্চাদের ছুটি না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করেন। এই সুযোগে বজলু তাদের সাথে টাঙ্কিবাজী করার চেষ্টা চালান। কথা-বার্তায় বজলু সাহেব বেশ ভালোই পটু। কিছু গার্ডিয়ানের সাথে তার বেশ ভালোই ভাব হয়েছে। স্কুলে গিয়েই তাদের সাথে খোশ গল্পে মেতে উঠেন আর চামে চিকনে তাদের গোপন অংগসমুহের দিকে ছুঁচোর মত তাকিয়ে থাকেন। তবে কিছু গার্ডিয়ান অবশ্য বজলু সাহেবের মতলব ইতিমধ্যে টের পেয়ে গেছেন। ইদানিং নাকি ২-১ জন বজলু সাহেবের বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করারও চিন্তা-ভাবনা করছেন। তো বজলু সাহেব, গার্ডিয়ানদের সাথে সাধারণত কি টাইপ বাকচিত করে থাকেন তার একটা নমুনা দেয়া যাক!


--ভাবীর লইগা মাঝে মাঝে পরানডা কাইন্দা উঠে আমার। এই রোদের মধ্যে খাইয়া না খাইয়া প্রতিটাদিন দাঁড়ায় থাকেন। এত সুন্দর গায়ের রঙটাও ময়লা হইয়া যাইতেছে দিন দিন!


--কি করব ভাই? ছোট বাচ্চা একা রেখে যেতেও ভয় লাগে। কয়েকটাদিন তো, একটু কষ্ট করতেই হবে! আর একটু বড় হোক তারপর একা ছেড়ে দেব।


--ভাই কি মাঝে-সাঝে ফোন টোন দেয় নি? নাকি বিদেশ গিয়া আপ্নের কথা ভুইলাই গেছে?


--না না কি বলেন আপনি? ও তো প্রতিদিনই অন্তত একবার হলেও ফোন দেয়।


--হুম। বুঝি ভাবি বুঝি, জামাই বিদেশ থাকলে বউ-এর কত কষ্ট সেইটা আমি ভালো কইরাই বুঝি! তো ভাবী কোন সমস্যা টমস্যা হইলে বইলেন। ভাই নাই তাতে কি? আমরা তো আর মইরা যাই নাই!


বজলু সাহেবের এই টাইপ অশ্লীল ইঙ্গিত অনেক গার্ডিয়ান অনেক ক্ষেত্রে বুঝেও না বোঝার ভান করে এড়িয়ে যায়!


--ভাবী কিন্তু শরীরের দিকে যত্ন নিয়েন। শরীর তো দেখি আগের চেয়ে অনেক শুকনা শুকনা লাগেতেছে।


স্কুল ছুটি হলে ছেলেকে নিয়ে বাসায় ফেরার সাথে সাথে যোহরের নামায আদায় করেন বজলু সাহেব। তারপর খাওয়া-দাওয়া শেষে হাল্কা-পাতলা একটা ঘুম দেন। এটা অবশ্য তার বহুত পুরোনো অভ্যাস। আসরের ওয়াক্ত হলে তিনি ঘুম থেকে উঠে আসরের নামায আদায় করেন। তারপর মাগরীরের আগ পর্যন্ত বাইরে হাটাহাটি করেন। এর মাঝে যদি পরিচিত কারো সাথে দেখা হয়ে যায় তাহলে তাকে জোর করে বসিয়ে দুনিয়ার আজাইরা আলাপ জুড়ে দেন। বজলু সাহেব ঘুরে ফিরে যেই ব্যাপারটা তার আলাপের মধ্যে নিয়ে আসেন তা হল যৌনতা। একারনে তার সমবয়সী লোকজন তাকে ইদানিং এড়িয়ে চলেন। তাছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে এসব ব্যাপার নিয়ে কথা বলার রুচি বা আগ্রহ প্রায় সবাই হারিয়ে ফেলেছেন। সবাই তো আর বজলু সাহেব না!! বজলু সাহেব আজকাল ছেলের বয়সী চ্যাংড়া পোলাপানের সাথেই যাইচা পইড়া কথা বলেন...


--আরে তুই আফজাল ভাইয়ের পোলা রতন না?


--আসস্লামুআলাইকুম চাচা কেমন আছেন?


--হন হন কইরা হাইটা যাচ গা! এলাকার মুরুব্বীগোরে চোখে পড়েনা নাকি?


--ভুল হইয়া গেছে চাচা। মাফ কইরা দিয়েন। চাচার শরীর ভালো নি?


--চাচার শরীরের খবর জিগাছ, নিজের চেহারা-সুরুত আয়না দিয়া দেহছ নি মাঝে মধ্যে?


--কেন চাচা? শরীর তো ঠিকই আছে।


--কয় কি পোলায়! চাপাডা যে ভাইঙ্গা দেড়হাত ভিতরে গেছে গা হেই খবর আছে নি তোর? কাছে আয় তোরে কিছু দামী পরামর্শ দেই!


--চাচা আজকে একটু কাজ আছে কালকে কইয়েন।


--দুইদিন পরে বিয়া করলে বউ-এ যহন লাত্থি দিয়া খাটের তিকা ফালায় দিব তহন তো চাচারে হারিকেন দিয়া খুজবি!!


বাপের বয়সী একটি লোকের কাছ থেকে এই ধরনের কথা শোনাটা চরম বিব্রতকর। কিন্তু কিছু করার নাই। বজলু সাহেবের ফাঁদে পড়লে এসব কথা শুনতেই হবে।


--তোর চেহারার যেই হাল দেখি...আমার তো মনে হয় প্রতি রাইতেই লুঙ্গি ভিজাছ!


--ধুরর চাচা! কি যে কন না আপনে!


--ঠিকই কই! চুল দাঁড়ি তো আর এমনি পাকাই নাই রে বাপ!


--চাচা আজকে আমার সত্যি সত্যি দেরী হইয়া যাইতাছে। আজকের মত ছাইড়া দেন!


--আইচ্ছা যা তাইলে! আমার লগে সময় কইরা একবার দেহা করিছ। একটা তাবিজ দিমুনে তোরে। তাবিজটা কোমড়ে বাইন্দা...


--চাচা আমি গেলাম।


--আরে শোন......


মাগরীবের নামাজ আদায়ের পর বজলু সাহেব যান তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসায়। এক স্ত্রীতে নাকি কোনোভাবেই চলছিল না বজলু সাহেবের। তাই বছর দুয়েক আগে লুকিয়ে লুকিয়ে আর একটি বিয়ে করেছেন তিনি। এই বিয়ের খবর তিনি সবার কাছে গোপন রেখেছেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর চেহারা সুরুত প্রথম স্ত্রীর ধারে কাছেও নেই। তবে মহিলার শরীর স্বাস্থ্য খারাপ না। বয়স ও খুব একটা বেশী না। বজলু সাহেব দ্বিতীয় স্ত্রী বজলু সাহেব সম্পর্কে সবকিছু জেনেই বিয়ে করেছে। মহিলা আসলে খুবই অসহায়। একটু খানি আশ্রয়ের জন্য বলতে গেলে অনেকটা বাধ্য হয়েই তিনি বজলু সাহেবকে বিয়ে করেছিলেন। বজলু সাহেব নিজ এলাকা থেকে একটু দূরে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। সেখানেই তার দ্বিতীয় স্ত্রী এক দুঃসম্পর্কের বোনকে নিয়ে বসবাস করেন। বজলু সাহেব প্রতিদিন সন্ধ্যায় সেখানে যান। ঘন্টা তিনেক কাটিয়ে আবার বাসায় ফিরে আসেন। ইদানিং দ্বিতীয় স্ত্রীর দুঃসম্পর্কের বোনের দিকেও কুনজর পড়েছে বজলু সাহেবের। মেয়েটির বয়স ২১-২২ হবে। খুবই লাবন্যময় চেহারা! বজলু সাহেব মাঝে মধ্যে চামে চিকনে ঐ মেয়ের সাথে আলাপ জমানোর চেষ্টা করেন কিন্তু দ্বিতীর স্ত্রীর কড়া প্রহরায় খুব একটা সুবিধা করতে পারেন না!


এভাবেই চলছে বজলু সাহেবের দিনকাল। এই রুটিনের ব্যাতীক্রম যে একেবারেই হয়না তা বলা যাবেনা। সেটা নিয়ে আজকে না হয় নাইবা গেজালাম!


যাই হোক রোজকার মত সেদিনও মাগরীবের নামায আদায় করে বজলু সাহেব তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসায় গেলেন। দরজা নক করতেই দেখলেন তার সুন্দরী শ্যালিকা দরজা খুলে দিয়েছে। শ্যালিকাকে এই প্রথম দরজা খুলতে দেখে একটু অবাকই হলেন বজলু সাহেব। তার দ্বিতীয় স্ত্রী কেন যে মেয়েটাকে এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে রাখে, বজলু সাহেব আজও সেটা বুঝে উঠতে পারেননি।


--তোমার আফায় কই?


--দুলাভাই আপনি বসেন। আপা এখনি চলে আসবে। পাশের ফ্ল্যাটেই আছে। আমি কি ডেকে দিব?


বজলু সাহেবের খুশী আর দেখে কে! কাচাঁপাকা দাড়ির আড়ালে অটোমেটিক মিষ্টি হাসি ফুটে উঠল। এই সুযোগের অপেক্ষায়ই তো বজলু সাহেব এতটা দিন ওত পেতে ছিলেন!


--আরে না না! তোমার আফায় তো ঘর থিকা এমনেই বাইর হয়না। আজইকা একটু শান্তিমত গল্পগুজব করুক।


--দুলাভাই আমি আপনের জন্য এককাপ চা বানিয়ে আনি?


--ওলে আমার পেয়ারী শ্যালিকা রে...চা পরে দিও। আসো আমার পাশে একটু বস। তোমার লগে কিছুক্ষন খোশগল্প করি।


বজলু সাহেবের সাথে গল্প করতে কখনোই তেমন একটা আরামবোধ করেনা রিনি(শ্যালিকার নাম)। রিনি সবসময়ই খেয়াল করে যে, বজলু সাহেব কখনো মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেনা, কথা বলে বুকের দিকে তাকিয়ে। আজকে রিনিকে একা পেয়ে একটু বেশীই অশ্লীলভাবে তাকাচ্ছে বজলু সাহেব। প্রচন্ড বিব্রতকর মুহুর্তের এক পর্যায়ে রিনি বলল......”দুলাভাই আমি চা বানিয়ে আনছি”। রিনি যখন উঠে যাচ্ছিল বজলু সাহেব শক্ত করে রিনির হাত চাপ ধরল। অবাক হয়ে রিনি বলল, “দুলাভাই কি করছেন আপনি? ছাড়েন আমাকে...” বজলু সাহেব হ্যাচকা টান দিয়ে রিনিকে বিছানার উপর ফালালো। রিনির মুখ চেপে ধরে নিষ্ঠুরভাবে ধর্ষন করল তাকে।


--শুয়োরের বাচ্চা বুইড়া!! আমি সবার কাছে তোর কুকীর্তির কথা ফাঁস করে দিবো। তোকে আমি আজীবন জেলের ভাত খাওয়ায় ছাড়ব...কুত্তার বাচ্চা!!


--কি কইলি মাগী?? তুই আমারে জেলের ভাত খাওয়াবি?? আর একটা কথা মুখ দিয়া বাইর করলে একদম খুন কইরা ফালামু!! তুই চিনছ আমারে!! চুপ একদম চুপ!!


রিনি যখন প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে চিৎকার চেচামেচি করতে লাগল, বজলু সাহেব কোনো উপায়ান্তর না দেখে রিনির গলা চেপে ধরল। বজলু সাহেব রিনিকে খুন করতে চাননি কিন্তু প্রচন্ড শক্ত ভাবে গলা চেপে ধরার কারনে রিনির মৃত্যু ঘটল!


বজলু সাহেব অত্যধিক ঘাঁবড়ে গেলেন। ভয়ে সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল তার। হাত পা কাঁপতে লাগল। কি করবেন কিছুই ভেবে পেলেন না তিনি! ঠিক তখনই তার দ্বিতীয় স্ত্রী-শরিফা দরজা নক করল। বজলু সাহেব ভেবে পাচ্ছিলেন না কি করবেন! ভয়ে ভয়ে দরজা খুললেন।


--কি ব্যাপার তোমারে এমন দেখা যাইতেছে কেন? ঘামতেছো কেন তুমি?


--শরীফা...আমি রিনিরে ইচ্ছা কইরা খুন করি নাই। তুমি তো তোমার স্বামীরে চেনো!


--কি বললা তুমি?? তুই আমার বইনরে খুন করছ?......খুন করছি তুমি????


--“আমি কিছু করি নাই...আমার কুনু দোষ নাই”---পাগলের মত প্রলাপ শুরু করল বজলু সাহেব!



এই কি হইছে তোমার? পাগলের মত কি বলতেছ ঘুমের মধ্যে? প্রথম স্ত্রীর কথায় হুরমুর করে বিছানা থেকে লাফিয়ে উঠল বজলু সাহেব। এটা কি তাহলে দুঃসপ্ন ছিল? বজলু সাহেবের যেন বিশ্বাসই হতে চাচ্ছিল না! তিনি যেন নতুন জীবন ফিরে পেলেন।


--বউ আমার জন্য এক গ্লাস পানি নিয়া আসবা?


--খারাপ সপ্ন দেখছিলা? আয়তুল কুরসী পইড়া বুকে একটা ফুঁ দাও। আমি পানি আনতেছি।


বজলু সাহেব মনে মনে ভাবলেন...ঘটনাটা যদি সত্যি সত্যি ঘটে যেত তাহলে কি জবাব দিতেন তিনি আল্লাহর কাছে? আল্লাহ কি খুনী ব্যাক্তিকে কোনদিন মাফ করতেন? অনন্তকাল কিভাবে জাহান্নামে পার করতেন তা ভেবেই ভয়ে কুকরে উঠলেন তিনি!!


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন